img

শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু বেশি। মোট মৃত্যুর এক–তৃতীয়াংশও ঢাকায়। তবে সংখ্যার দিক থেকে ঢাকায় মৃত্যু বেশি হলেও জেলাভিত্তিক নিশ্চিত আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি চাঁদপুরে।

বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে দেশের ৬৪ জেলায় জেলাভিত্তিক নিশ্চিত আক্রান্ত রোগী ও মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাঁদপুরে এ পর্যন্ত (১৪ সেপ্টেম্বর) করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ২০২ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১০৬ জন। সে হিসাবে চাঁদপুরে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে মৃত্যুর হার ৪ দশমিক ৮১ শতাংশ। মৃত্যুর হারের দিক থেকে চাঁদপুরের পাশের জেলা কুমিল্লা আছে দ্বিতীয় স্থানে। এই জেলায় মৃত্যুর হার ৩ দশমিক ৫২ শতাংশ। তৃতীয় স্থানে আছে ঝিনাইদহ। এখানে মৃত্যুর হার ৩ দশমিক ১২ শতাংশ। এই তিন জেলায় মৃত্যুর হার ৩ শতাংশের ওপরে।

এর বাইরে ২৬টি জেলায় করোনায় মৃত্যুর হার ২ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে। আর ঢাকাসহ ৯টি জেলায় মৃত্যুর হার ১ শতাংশের কম। বাকি আট জেলা হচ্ছে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, রাজবাড়ী, নরসিংদী, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও জয়পুরহাট। দেশে মৃত্যুর হার সবচেয়ে কম বান্দরবানে, শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ। বাকি ২৬টি জেলায় মৃত্যুর হার ১ থেকে ২ শতাংশের মধ্যে। আর সারা দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় নিলে মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪১ শতাংশ।

দেশে করোনায় মৃত্যু নিয়ে এখন পর্যন্ত সরকারিভাবে বিস্তারিত কোনো গবেষণা হয়নি। চাঁদপুর, কুমিল্লায় মৃত্যুর হার কেন এত বেশি এবং অন্য জেলায় মৃত্যুর হার সে তুলনায় কম কেন, তার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো অজানা। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঢাকার বাইরে পরীক্ষা কম হচ্ছে। যে কারণে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অনেকে পরীক্ষার বাইরে রয়ে যাচ্ছেন। এতে নিশ্চিত আক্রান্তের সংখ্যা কম হচ্ছে। মৃত্যুর হার বেশি হওয়ার এটি একটি কারণ। আবার ঢাকার বাইরে চিকিৎসাসেবাও ততটা উন্নত নয়, মানুষের মধ্যে সচেতনতাও কম। এসব কারণে মৃত্যুর হার ঢাকার বাইরে বেশি।

চাঁদপুরে প্রথম করোনায় মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করা হয় গত ৪ এপ্রিল। এপ্রিল, মে, জুন, জুলাই—এই চার মাসে সেখানে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটেছে। আবার এই জেলার মধ্যে চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জে মৃত্যুর ঘটনা বেশি। তবে আগস্ট মাস থেকে মৃত্যুর সংখ্যা কমে এসেছে। শুরুর দিকে চিকিৎসাব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে মৃত্যু বেশি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। জেলার কোনো সরকারি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) নেই।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর