img

স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা হিসেবে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়। কারও একাধিকবার অস্ত্রোপচারের দরকার হয়। এসব অস্ত্রোপচারের পর কিছু  সমস্যা দেখা দেয়। যেমন কাঁধ, হাত বা বুকে ব্যথা, জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। কাঁধ ও হাতের ক্রিয়াশীলতা যেমন কাপড় পরা, গোসল করা, চুল আঁচড়ানো ইত্যাদি করতে অনেক কষ্ট হয়। তা ছাড়া আশপাশের মাংসপেশিগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে। এমন সমস্যাগুলো কমাতে ফিটনেস বাড়াতে ফিজিওথেরাপির বিকল্প নেই। ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে ব্যথা কমানো, ঘাড়, বুক, হাত ও কাঁধের জয়েন্টগুলোকে জড়তামুক্ত করা, চলনক্ষমতা বাড়ানো, শ্বসনতন্ত্র ও হৃদ্‌যন্ত্রের ফিটনেস বাড়ানো এবং শরীরের পজিশন ঠিক রাখা হয়।

চেস্ট ফিজিওথেরাপি: অস্ত্রোপচারের পর শ্বসনতন্ত্র ও হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন ধরনের শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম যেমন স্পাইরোমেট্রিক ব্যায়াম, ডিপ ব্রিদিং খুবই কার্যকর।

মাইয়োফেসিয়াল রিলিজ: অস্ত্রোপচারের আশপাশের জায়গা যেমন বুকের প্রাচীর, কাঁধ ও হাতের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়া, অল্পতেই প্রচণ্ড ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা মাইয়োফেসিয়াল রিলিজ ও সফট টিস্যু মবিলাইজেশনের মাধ্যমে কমানো সম্ভব।

লিম্ফেটিক ড্রেনেজ ম্যাসাজ: এটি একধরনের বিশেষ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাপদ্ধতি, যার মাধ্যমে অস্ত্রোপচার সংশ্লিষ্ট ও আশপাশের জায়গা যেমন হাত, কাঁধ ইত্যাদি ফুলে যাওয়া কমানো হয় এবং সংশ্লিষ্ট অঙ্গগুলোর নড়াচড়া বৃদ্ধি করা হয়।

স্ট্রেচিং ও বলকারক ব্যায়াম: অস্ত্রোপচারের ফলে অনেক সময় মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। ফিজিওথেরাপিস্ট রোগীর ফিটনেস লেভেল অনুসারে বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেচিং ও বলকারক ব্যায়াম করতে হবে। এ ধরনের ব্যায়াম অবশ্যই অস্ত্রোপচারের ৪-৬ সপ্তাহ পর শুরু করতে হবে এবং প্রথম দিকে মাঝারি মাত্রা ও পরে আস্তে আস্তে মাত্রা বাড়াতে হবে।

সরু লাঠি ব্যায়াম: বিছানার ওপর হাঁটু ভাঁজ করে সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার একটি লম্বা সরু লাঠি দুই হাত দিয়ে মুঠ করে পেট বরাবর ধরুন। এবার লাঠিটি ওপরে উঠিয়ে যতটুকু সম্ভব মাথা বরাবর নেওয়ার চেষ্টা করুন। ৫ সেকেন্ড থামুন। এবার লাঠিটি আবার পেট বরাবর নিন। এভাবে ৫-৭ বার করুন। এই ব্যায়ামের ফলে কাঁধের সামনের দিকের চলাচলের ক্ষমতা বাড়বে।

এলবো উইঙ্গিং: বিছানার ওপর হাঁটু ভাঁজ করে সোজা চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার হাত দুটো ঘাড়ের পেছনে রেখে কনুই দুটি সিলিং বরাবর নিয়ে আসুন। ৫ সেকেন্ড ধরে রাখুন। ছেড়ে দিন। এভাবে ৫-৭ বার করুন।

শোল্ডার স্ট্রেচ: দেয়ালের কাছে সোজা হয়ে দাঁড়ান (দেয়াল থেকে পায়ের আঙুলের দূরত্ব ৮-১০ ইঞ্চি)। দুই হাত দেয়ালে রাখুন। এবার ২ হাতের আঙুল দিয়ে দেয়াল ঘেঁষে আস্তে আস্তে যতটুকু সম্ভব হাত ওপরে ওঠান। এই অবস্থায় দেয়ালে ধাক্কা দিন। এবার হাত দুটো আস্তে আস্তে নিচে নামান। এভাবে ৫-৭ বার করুন।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর