করোনাকালেও ভিয়েতনামের উজ্জ্বল অর্থনীতি
করোনা মহামারি মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও ভিয়েতনাম এশিয়ার ‘সবচেয়ে উজ্জ্বল’ অবস্থানের মধ্যে অন্যতম। গত সপ্তাহে ইউনিয়ন ব্যাংক অব সুইজারল্যান্ডের এক অর্থনীতিবিদ এমন মন্তব্যই করেছেন।
ইউবিএস রিসার্চের এশিয়ান অর্থনীতিবিদ এডওয়ার্ড টিদার বলেন, কোভিড-১৯–এর প্রভাবে ভিয়েতনাম কিছুটা আঘাত পেলেও এই অঞ্চলের মধ্যে দেশটির পূর্বাভাস সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখাচ্ছে।
গণমাধ্যম সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘খুচরা বিক্রি, আমদানি ও শিল্প উৎপাদন—সবই গত বছরের তুলনায় এই জুন মাসে ভালো হয়েছে, যা এ অঞ্চলের বেশির ভাগ অর্থনীতির চেয়ে ভালো অবস্থান বলতে পারেন।’ এশিয়ার অনেক অর্থনীতি গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে সংকুচিত হয়েছে। তবে ভিয়েতনামের মোট দেশীয় উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে আনুমানিক শূন্য দশমিক ৩৬ শতাংশ।
চীনের সঙ্গে লাগোয়া সীমান্ত থাকলেও করোনার প্রকোপ মোকাবিলায় বেশ সফল ভিয়েতনাম। চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে এই করোনাভাইরাসের উৎপত্তি বলে ধারণা করা হয়। জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির তথ্য অনুসারে, প্রায় ১০ কোটি মানুষের দেশ ভিয়েতনামে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৩৬৯। কেউ মারা যাননি।
টিদার বলেন, ভিয়েতনাম ক্রমবর্ধমান এবং রপ্তানি এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববাজারের অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখার সু-অবস্থানে আছে। তাই এই অঞ্চলের আপেক্ষিক অর্থে উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। বেইজিং ও ওয়াশিংটনের মধ্যে টানাপোড়েনের কারণে যে শুল্ক বাড়ছে, এ কারণে চীন থেকে উৎপাদন সরিয়ে নিতে চায়—এমন সংস্থাগুলোর বিকল্প উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে দেশটিকে দেখা হচ্ছে।
টিদার বলেন, গত মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি অনুমোদন পেয়েছে, যা দেশটিতে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে সামগ্রিকভাবে এফডিআই কিছুটা বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলেও মনে করছেন টিদার। কারণ, বিনিয়োগকারীরা অবাধে ভ্রমণ করতে পারে না। অবশ্য এখানে প্রচুর কর্মকাণ্ডের সুযোগ রয়েছে এবং সীমানা বিধিনিষেধ কমে যাওয়ায় ২০২১ সালে এই বিনিয়োগ বাড়তে পারে।
সরকারি সহায়তা ভিয়েতনামের অর্থনীতিকে সুশৃঙ্খল করছে বলে মনে করেন টিদার। তিনি বলেন, সম্প্রতি দেশটির প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতিকে সহায়তার জন্য আরও ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। দেশটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে যে তারা ঋণের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশের বেশি করতে যায়।
জিরোআওয়ার২৪/এমএ